কালের বিবর্তনে ব্রাহ্মণপাড়া থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ

মোঃ বাছির উদ্দিন।।
চারদিকে বইছে মৃদু দখিনা বাতাস। কোকিলের সুমিষ্ট কুহুতানে ফাগুনের উত্তাল হাওয়া দিচ্ছে দোলা। গাছে গাছে গজিয়ে ওঠেছে সবুজ পাতা। আমের মুকুল ফুল দেখে বোঝা যায়, শীত বিদায় নিয়ে এসেছে ফাগুন।

একসময় ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে আবহমান গ্রামবাংলার প্রকৃতি রাঙিয়ে উঠে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল, কিন্তু কালের বিবর্তনে কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ফাগুনে চোখ ধাঁধানো গাঢ় লাল রঙের অপরূপ সাজে সজ্জিত শিমুল গাছ এখন বিলুপ্তপ্রায়।

এক যুগ আগেওে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা ও গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির আনাচে-কানাচে, রাস্তায়, পতিত ভিটায় প্রচুর শিমুল গাছ দেখা যেত। গাছে গাছে ফুটে ওঠা শিমুল ফুলই স্মরণ করিয়ে দিত বসন্তের আগমন। প্রাকৃতিকভাবে তুলা আহরণের অন্যতম অবলম্বন শিমুল গাছ। জানা যায়, এ গাছের সব অংশেরই রয়েছে ভেষজ গুণ। শীতের শেষে শিমুলের পাতা ঝরে পড়ে।

বসন্তের শুরুতেই গাছে ফুল ফোটে। আর এ ফুল থেকেই হয় ফল। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে যায়। বাতাসে আপনা-আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সঙ্গে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকে নতুন গাছের জন্ম নেয়। অন্যান্য গাছের মতো এ গাছ কেউ শখ করে রোপণ করে না। নেওয়া হয় না কোনো যত্ন। প্রাকৃতিকভাবেই গাছ বেড়ে ওঠে। এ গাছের প্রায় সব অংশই কাজে লাগে। এর ছাল, পাতা ও ফুল গবাদিপশুর খুব প্রিয় খাদ্য।

বর্তমানে মানুষ এ গাছ কারণে-অকারণে কেটে ফেলছে। অতীতে নানা ধরনের প্যাকিং বাক্স তৈরি ও বিভিন্ন জ্বালানি, দিয়াশলাইয়ের কাঠি হিসেবে ব্যবহার হলেও সেই তুলনায় রোপণ করা হয়নি । ফলে আজ বিলুপ্তির পথে শিমুল গাছ। উপজেলার সিদলাই ইউনিয়নের পোমকাড়া গ্রামের প্রবীণ আবদুল মান্নান বলেন, আগে গ্রামে প্রচুর শিমুল ( তুলা) গাছ ছিল। এখন আর দেখা যায় না।

তিনি আরো বলেন, একটি বড় ধরনের গাছ থেকে তুলা বিক্রি করে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। আগের তুলনায় এখন শিমুলের তুলার দাম অনেক বেড়ে গেছে। আজ এ শিমুল ( তুলা) গাছ উপজেলায় কোথাও তেমন একটা চোখে পড়ে না। শিমুল গাছ আজ বিলুপ্তির পথে।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০  

You cannot copy content of this page